মো:পারভেজ আহমদ ::::: সিলেট সিটি কর্পোরেশনের দুইবারের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী এবার সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর) আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে জনপ্রিয় স্থানীয় নেতা আব্দুল হাকিম চৌধুরীর সমর্থকরা ‘বহিরাগত প্রার্থী’ হিসেবে আরিফকে মেনে নিতে নারাজ। তার প্রার্থিতার বিরোধিতা করে শনিবার রাতে হাজারো মানুষ রাস্তায় নামে মশাল মিছিলে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
তারা স্লোগান দেন— ‘লোকাল চাই, লোকাল চাই, হাকিম ভাইকে প্রার্থী চাই।’
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার অন্তত ১৫টি স্থানে বিক্ষোভ মিছিল হয়। তাদের দাবি, প্রতি নির্বাচনেই এ আসনে বাইরে থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়, যা স্থানীয়দের প্রতি অবিচার।
গোয়াইনঘাটের স্থানীয় নেতারা বলেন, “এই আসনে আমরা সবসময় আব্দুল হাকিম চৌধুরীকেই পাশে পেয়েছি। তিনি এলাকার সন্তান। তাই আমরা কোনো অতিথি প্রার্থী চাই না।”
তারা বিএনপি হাইকমান্ডের প্রতি আহ্বান জানান— সিলেট-৪ আসনে স্থানীয় প্রার্থী হিসেবেই যেন হাকিম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
ঢাকায় গিয়ে ‘চমক’ দেখান আরিফুল হক
এর আগে সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন না পেয়ে ঢাকা যান আরিফুল হক চৌধুরী। সেখানে গিয়ে চমক দেখান তিনি। বুধবার রাতে গণমাধ্যমে জানান, “বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাকে সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন।”
পরদিন শুক্রবার সিলেটে ফিরে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন তিনি। সিলেট-৪ আসনের সাবেক সাংসদ প্রয়াত দিলদার হোসেন সেলিমের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু হয়। যদিও শনিবার রাত পর্যন্ত বিএনপি কেন্দ্র থেকে তার প্রার্থিতা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি।
আরিফুল হকের সমর্থকরা বলেন, “তিনি কাজের মানুষ, উন্নয়নই তার মূল লক্ষ্য। এম সাইফুর রহমানের হাত ধরে উন্নয়ন করতে শিখেছেন। মেয়র হিসেবে সিলেটে উন্নয়নের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, সংসদ সদস্য হলে সিলেট-৪ কে আরও এগিয়ে নেবেন।”
গত সোমবার বিএনপি ঘোষিত ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করে। তবে সিলেটের ৬টি আসনের মধ্যে সিলেট-৪ ও সিলেট-৫ আসনের প্রার্থী তখনও ঘোষণা করা হয়নি। এরপর থেকেই শুরু হয় আলোচনা— কে পাবেন পর্যটনখ্যাত এ আসনের টিকিট?
এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সামসুজ্জামান জামান, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা হেলাল উদ্দীন এবং প্রয়াত সাংসদ দিলদার হোসেন সেলিমের স্ত্রী অ্যাডভোকেট জেবুন্নাহার সেলিম।
এখন প্রশ্ন একটাই— বিএনপির হাইকমান্ড শেষ পর্যন্ত কাকে মনোনয়ন দেয়? জনপ্রিয় সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে, নাকি স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা আব্দুল হাকিম চৌধুরীকে?
তবে একথা নিশ্চিত— সিলেট-৪ আসন এখন পুরো সিলেট জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
Leave a Reply